এবার ‍ফুটবলকে চির বিদায় জানালো যে ৭মহাতারকা বিস্তারিত পড়ুন

প্রতিটি বিশ্বকাপই হয় আসে কারো আগমনী বার্তা নিয়ে নয়তো বিদায়ী বার্তা নিয়ে। রাশিয়া বিশ্বকাপ যেমন দর্শকদের এমবাপ্পে, চেরিশেভের মত সম্ভাবনাময় উদীয়মানদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, তেমনি কারো কারোর অগ্রিম বিদায়ের করুণ রাগিনীও বাজিয়েছে। ২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠেয় আগামী বিশ্বকাপে হয়ত তাদের অনেককেই দেখা যাবে না। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৭ জন বড় তারকা-
লুকা মডরিচ (ক্রোয়েশিয়া): রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার অভাবনীয় স্বপ্নযাত্রার মূল কান্ডারি ছিলেন মডরিচ। ক্রোয়েশীয় অধিনায়ক জিতেছেন টুর্ণামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও। কিন্তু আগামী কাতাে বিশ্বকাপে হয়ত আর দেখা যাবে না মডরিচকে। ২০২২ সালে ক্রোট মিডফিল্ডারের বয়স যে ততদিনে হয়ে যাবে ৩৭ বছর।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল): স্পেনের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক দিয়ে বিধ্বংসী ভাবে বিশ্বকাপ শুরু করেন রোনালদো। তবে পর্তুগালকে খুব বেশি দূর নিতে পারেননি তিনি, বাদ পড়তে হয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ডেই। কাতার বিশ্বকাপের সময়ে পর্তুগিজ অধিনায়কের বয়স হবে ৩৭ বছর। ততদিনে আরেকটি বিশ্বকাপ খেলার মত অবস্থায় রোনালদো থাকবেন কি না তা নিশ্চিত নয়।

সার্জিও রামোস (স্পেন): স্প্যানিশ অধিনায়ক লা রোজাদের হয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁয়েছেন ২০১০ সালেই। তবে তাঁর পরবর্তী দুটি বিশ্বকাপ থাকবে বিস্মরণযোগ্য স্মৃতি হয়েই। ২০১৮ বিশ্বকাপে স্বাগতিক রাশিয়ার কাছে দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে। ২০১৪ বিশ্বকাপে তো যাত্রা শেষ হয়ে গিয়েছিল প্রথম রাউন্ডেই। ২০২২ সালে ৩৬ বছর বয়সে আরেকটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ না করেই হয়ত স্পেনের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ হবে স্প্যানিশ অধিনায়কের।

লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা): বার্সেলোনার হয়ে যতটা উজ্জ্বল আর্জেন্টিনার হয়ে ততটাই নিষ্প্রভ- এমন বদনাম চির সঙ্গী করেই হয়ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি ঘটবে মেসির। গত বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল জিতলেও রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরু থেকেই সমালোচনা ছিল তার নিত্য সঙ্গী। দলও বাদ পড়েছে দ্বিতীয় রাউন্ডেই। কাতারে ৩৫ বছর বয়সে ২০২২ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে হলে বেশ কাঠখড়ই পোড়াতে হবে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে।

মার্সেলো (ব্রাজিল): ব্রাজিলের হয়ে দুটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে দুবারই হতাশাকে সঙ্গী করে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে মার্সেলোকে। গত বিশ্বকাপে নিজেদের মাটিতে সেমিফাইনালে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হতে হয়েছে সেলেসাওদের। আর এবার ভাল ফর্মে থেকেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোয়ার্টারে বাদ পড়তে হয়েছে বেলজিয়ামের কাছে হেরে। কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপ হয়ত ঝাঁকড়া চুলের বিনোদনময়ী এই ফুটবলারকে মিস করবে, ততদিনে যে ৩৬ বছর বয়সে পা দিবেন সেলেসাও লেফটব্যাক।

টমাস মুলার (জার্মানি): জার্মানদের হয়ে গত দুই বিশ্বকাপেই অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন মুলার। ৫ গোল দিয়ে ২০১০ বিশ্বকাপে জিতেছিলেন গোল্ডেন বুট। ৫ গোল করে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন জার্মানির ৪র্থ বিশ্বকাপ জয়েও। কিন্তু ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মান স্ট্রাইকার নিদারুণ ফ্লপ। নিজে ছিলেন গোলশূন্য, দলও বাদ পড়েছে গ্রুপপর্বে। কাতার বিশ্বকাপে নাও দেখা যেতে পারে মুলারকে। বয়স অবশ্য কোন সমস্যা নয়। কিন্তু জার্মানির ফুটবল দলকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে পুরোনো কিছু খেলোয়াড় অবাঞ্ছিত থাকবেন; মুলারের সে তালিকায় থাকার কথা ওপরের দিকেই।

লুইস সুয়ারেজ (উরুগুয়ে): গত দুই বিশ্বকাপের সেরা আলোচিত চরিত্র ছিলেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। ২০১০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে হাত দিয়ে গোল ঠেকিয়ে হয়েছিলেন উরুগুয়ের নায়ক। আর গত বিশ্বকাপে ইতালিয়ান সেন্টারব্যাক জর্জিও কিয়েলিনিকে কামড়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ৪ মাস। তবে গত দুই বিশ্বকাপে তার ফর্মও ছিল নজরকাড়া। কিন্তু এবার সে তুলনায় অনুজ্জ্বলই ছিলেন। ২০২২ সালে কাতারে ৩৬ বছর বয়সে আরেকটি বিশ্বকাপ খেলার সৌভাগ্য হয়ত হবে না সুয়ারেজের।

Share this: